লিভারপুল ৭ : ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ০! অবিশ্বাস্য হলে এটাই সত্য, ভাবতে না পারলেও মানতে বাধ্য।নিজেদের মাঠে রেড ডেভিলদের এভাবেই আতিথেয়তা দিয়েছে ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা। পুরোদস্তুর গোল উৎসব করেই ইউনাইটেডকে দিয়েছে লজ্জা। সেই সাথে বদলে দিয়েছে শতাধিক বছরের পুরনো ইতিহাস, এ যেন রাজ্যের অবিশ্বাস!
গতরাতটা যেন ইউনাইটেডের জন্য হয়ে উঠেছিল দুঃস্বপ্ন, কী নিষ্ঠুর বেদনাবিধুর দুর্বিষহ এক রাত! দুই দলের দ্বৈরথ বরাবরই ফুটবল প্রেমীদের এনে দেয় উত্তেজনার খোরাক। রোববারও তারই আভাস ছিল, প্রথমার্ধে দুই দল সমানে-সমানেই লড়ছিল। এমনকি কাসিমেরোর একটা হেড জালও খুঁজে নিয়েছিল, যদিও অফসাইডে তা বাতিল হয়ে যায়।
সেই শুরু, সেই শেষ : পুরো ম্যাচে আর জালের দেখা পাওয়া হয়নি ইউনাইটেডের। এদিকে লিভারপুল প্রথম গোলের দেখা পায় ৪৩তম মিনিটে, গাকপোর গোলে তারা ১-০-এ এগিয়ে যায়। একই ব্যবধানে বিরতিতে যায় উভয় দল, তখনো রেড ডেভিলরা ভাবতেই পারেনি দ্বিতীয়ার্ধে কী অপেক্ষা করছে তাদের জন্যে, ভাবতে পারেনি হয়তো লিভারপুলের ফুটবলাররাও।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ৫ মিনিটেই আরো দুই-দুবার জালে বল পাঠিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় লিভারপুল, এগিয়ে যায় ৩-০ গোলে। ৪৭তম মিনিটে তরুণ মিডফিল্ডার হার্ভি এলিয়টের ছোট করে বাড়ানো ক্রসে হেডে গোলটি করেন নুনেস। আর তার ৩ মিনিট পর প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে সালাহ খুঁজে নেন গাকপোকে, আর দুরূহ কোণ থেকে গোলরক্ষককে বোকা বানান তিনি। ম্যাচে যা ছিল তার দ্বিতীয় গোল।
আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে যাওয়া ম্যানইউকে আরো চেপে ধরে লিভারপুল, একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে তাদের রক্ষণ। যার ধারাবাহিকতায় এবার নিজেই জাল খুঁজে পান সালাহ, ৬৬তম মিনিটে দলকে ৪-০-এ এগিয়ে দেন এই মিশরীয় ফরোয়ার্ড। ৮৩তম মিনিটে আরো একটা গোল করেন তিনি, যা মৌসুমে তার ২২তম গোল। সুবাদে একটা রেকর্ডও গড়েছেন সালাহ, লিভারপুলের হয়ে প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোল সংগ্রাহক এখন তিনি; ২০৫ ম্যাচে ১২৯ গোল।
সালাহর দ্বিতীয় গোলটি ছিল দলীয় ষষ্ঠ গোল, মাঝে পঞ্চম গোলটি আসে নুনেসের মাথা থেকে৷ ৭৫তম মিনিটে জর্ডান হেন্ডারসনের বাড়ানো ক্রসে হেডে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় পঞ্চম গোলটি করেন এই উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড। আর সপ্তম গোলটি আসে গাকপোর বদলি নামা ফিরমিনোর পা থেকে, ৮৮তম মিনিটে সালাহর থ্রু করা বল ধরে ইউনাইটেডের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। ৭-০ গোলের জয় পায় লিভারপুল।
ইউনাইটেডের বিপক্ষে স্বাভাবিকভাবেই এটিই ছিল লিভারপুলের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। আগের বড় ব্যবধানটি ছিল ৭-১ গোলের, ১৮৯৫ সালে তারা ওই তেতো স্বাদ দিয়েছিল ইউনাইটেডকে। বিপরীতে ক্লাবের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় ব্যবধানে হারেনি ইউনাইটেড। সবশেষ ১৯৩১ সালে উলভসের বিপক্ষে ৭-০ গোল হজম করেছিল তারা।
এই জয়ে ২৫ ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠেছে লিভারপুল। ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে। বিপরীতে ২৬ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল। সমান ম্যাচে ৫ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে ম্যানচেস্টার সিটি।