

Tofazzal Liton, December 15, 2020. New York.
সর্বত্র তাঁদের নাম বলা উচিৎ নয় কি?
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে/ বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা/আমরা তোমাদের ভুলবো না…
পাক বাহিনীর আত্মসমর্থনের খবর পাওয়ার পরপরই ১৯৭১সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে উপরের গানটি প্রচারিত হয়- মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের গানের কথা আসলে, মনের ভেতর বাজে-
– পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে/ রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল/জোয়ার এসেছে জন সমুদ্রে/ রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল। …
মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি / মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি/ যে মাটির চির মমতা আমার অঙ্গে মাখা..
গোবিন্দ হালদার এর লেখা উপরের তিনটি গান ছাড়া বাংলাদেশের কোন জাতীয় অনুষ্ঠান হয় বলে মনে হয় না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতারে সম্প্রচারিত গোবিন্দ হালদার লেখা গানসমূহ মুক্তিযোদ্ধাদের কেমন অনুপ্রাণিত করতো যারা গান গুলো মন দিয়ে শুনেছেন কোনদিন কেবল তারাই বুঝতে পারবেন।
রাত পেরোলেই বিজয়ের দিন। ফেসবুকে দেশের গানের কথা লিখে স্ট্যাটাস দেয়া হবে অযুত-নিযুত। টিভি রেডিও ইউটিউব ওয়েব আড্ডা ছেয়ে ফেলা হবে বিজয় ও যুদ্ধ সময়ের গানে গানে।
অথচ ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ আয়োজনে বলা বা লেখা হয় না অমূল্য সব গানের গীতিকারের নাম। এমনকি শিল্পীরাও বলেন না অথবা জানেন না। দয়া করে চলুন তাঁদের নাম বলে এবং লিখে গুণীজনের প্রাপ্য সম্মান টুকু দিয়ে কিছুটা ঋণ মুক্ত হই।
মুক্তিযুদ্ধের সময় গোবিন্দ হালদার রচিত উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে আছে লেফট রাইট লেফট রাইট, হুঁশিয়ার হুঁশিয়ার, পদ্মা মেঘনা যমুনা, চলো বীর সৈনিক, হুঁশিয়ার, হুঁশিয়ার বাংলার মাটি অন্যতম।
ভারতের আকাশবাণী বেতারের তালিকাভুক্ত এ গীতিকার ১৯৩০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি কলকাতায় মারা যান।
তোফাজ্জল লিটন
১৫ ডিসেম্বর ২০২০। নিউইয়র্ক।